১৩ তম গ্রেডের বেতন স্কেল

বাংলাদেশের শিক্ষকদের বেতন বেশ কম এবং ১৩ তম গ্রেডে শিক্ষক ছাড়াও সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, পিএ, একান্ত সহকারী পদগুলো রয়েছে।

এসব পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৩ তম গ্রেডে যোগদান সম্পন্ন হয়ে থাকে। ১৩ গ্রেডে মূল বেতন ১১,০০০ টাকা এবং সর্বসাকুল্যে মোট বেতন ১৯,৩০০ টাকা নির্ধারিত হয়। তবে অঞ্চল এবং ডিপার্টমেন্ট ভেদে মোট বা সাকুল্য বেতনের কিছুটা তারতম্য হয়ে থাকে।

১৩ তম গ্রেডে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন কত ?

সহকারী শিক্ষকদের বেতন বর্তমানে ২০২০ সাল হতে ১৩ তম গ্রেড নির্ধারিত হয়েছে। ১৫ তম গ্রেড ৯৭০০ স্কেলের মূল বেতন ০৯/০২/২০২০ তারিখে ১৩ তম গ্রেড ১১০০০-২৬৫৯০ স্কেলে নিম্নে উল্লেখিত হারে নির্ধারণ করা হয়েছে। 

বিদ্যমান মূল বেতন অনুসারে ফিক্সেশনের মাধ্যমে উন্নীত গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করেছে। ৯৭০০ টাকা স্কেলে মূল বেতন ৯৭০০ টাকা হলে ১১০০০ টাকা, ১০১৯০ টাকা হলে ১১০০০ টাকা , ১০৭০০ টাকা হলে ১১০০০ টাকা, ১১২৪০ টাকা হলে ১১৫৫০ টাকা, ১১৮১০টাকা হলে ১২১৩০ টাকা, ১২৪১০ টাকা হলে ১২৭৪০ টাকা, ১৩০৪০ টাকা হলে ১৩৩৮০ টাকা, ১৩৭০০ টাকা হলে ১৪০৫০ টাকা, ১৪৩৯০ টাকা হলে ১৪৭৬০ টাকা, ১৫১১০ টাকা হলে ১৫৫০০ টাকা, ১৫৮৭০টাকা হলে ১৬২৮০ টাকা, ১৬৬৭০ টাকা হলে ১৭১০০ টাকা, ১৭৫১০ টাকা হলে ১৭৯৬০ টাকা, ১৮৩৯০ টাকা হলে ১৮৮৬০ টাকা, ১৯৩১০ টাকা হলে ১৯৮১০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়।

সদ্য চাকরি হওয়া সহকারী শিক্ষকের মোট বেতন কত টাকা দেওয়া হবে ?

যারা নতুন সহকারী শিক্ষক (যেমনঃ ২/৪ বছর চাকরি করেছেন) তারা কত বেতন পান তা যদি আমরা নির্ণয় করি, তাহলে পাওয়া যায় ১৩তম গ্রেডে মূল বেতন যদি ১২৭৪০ টাকা হয়। তবে মূল বেতনের সাথে বাড়ি ভাড়া বাবদ উপজেলায় লেভেল এ ৪৫% হারে ৫,৭৩৩ টাাক বাড়ি ভাড়া পেয়ে থাকেন।

চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা এবং টিফিন ২০০ টাকা পেয়ে থাকেন। এখন যদি সর্বমোট প্রাপ্যতা হিসাব করা হয় তবে সাকুল্য বেতন বের হয়ে আসবে। ১২,৭৪০+ ৫,৭৩৩+ ১,৫০০ +২০০ = ২০,১৭৩ টাকা অর্থাৎ ধরে নিতে পারেন, বিয়ের পূর্বে একজন সহকারী শিক্ষক ২০ হাজার টাকা থেকে ২২ হাজার টাকা বেতন ভাতাদি হাতে পেয়ে থাকেন।

গ্রেড-১৩ মানেই ২৬৫৯০ টাকা বেতন শুরু এমন কিন্তু নয়। মূলত ১১০০০ টাকা হতে বেতন শুরু হবে এবং  উক্ত গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি পেতে পেতে সর্বোচ্চ ২৬,৫৯০ টাকা হতে পারবেন। সিলিং বা শেষ ধাপে পৌছার পর বছর পার হলেও কোন বেতন বৃদ্ধি করা হবে না। 

১৩ তম গ্রেডে স্কেল ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা অর্থাৎ ১১০০০ টাকা-১১৫৫০ টাকা, ১২১৩০ টাকা-১২৭৪০টাকা, ১৩৩৮০টাকা-১৪০৫০টাকা, ১৪৭৬০ টাকা-১৫৫০০ টাকা, ১৬২৮০ টাকা-১৭১০০ টাকা, ১৭৯৬০ টাকা-১৮৮৬০ টাকা, ১৯৮১০ টাকা-২০৮১০ টাকা, ২১৮৬০ টাকা-২২৯৬০ টাকা, ২৪১১০ টাকা-২৫৩২০ টাকা, ২৬৫৯০ টাকা পর্যন্ত।

১৩ তম গ্রেড কোন শ্রেণীর পদ ?

বর্তমানে শ্রেণী বৈষম্য নেই এবং গ্রেড মোতাবেক পরিচিত হবে। তবু পূর্বের ধারাবাহিকতা অনুসারে ১৩ তম গ্রেডে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে গণ্য করা হবে। ১১-২০ তম গ্রেড পর্যন্ত ৪র্থ শ্রেণী এবং ১০ তম গ্রেড দ্বিতীয় শ্রেণীর পদ এবং ৯-১ পর্যন্ত ১ম শ্রেণীর পদ হিসেবে গণ্য করা হবে।

প্রতি বছর বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি পায়। সরকারি কর্মচারীদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি পূর্বে প্রতি বছর প্রথম যোগদান অনুসারে প্রদান করতে হতো। বর্তমানে প্রতিবছর জুলাই মাসের ১ তারিখে অর্থাৎ একই তারিখে আনা হয় থাকে। সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একই তারিখে অর্থাৎ ১লা জুলাই মাসে বৃদ্ধি করা হয় এবং এভারেজে ১১-২০ তম গ্রেডের কর্মচারীদের তাদের মূল বেতনের ৫% বেতন বৃদ্ধি পায়। উপরের স্তরে ১-১০ গ্রেডে মূল বেতনের ৩-৪% হারে বৃদ্ধি করা হয়।

সম্প্রীতি কিছু বছর পূর্বের কিছু প্রতিবেদন থেকে নেওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসামগ্রীঃ 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর অর্থ বিভাগের সম্মতিক্রমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১৪ থেকে ১৩তম গ্রেডে উন্নীতকরণ করা হয়েছে।

আরো বলা হয়েছে, নির্দেশনার ফলে এখন থেকে সহকারী শিক্ষকরা যোগদানের পরই ১৩তম গ্রেডে বেতন-ভাতা সুবিধা পেয়ে যাবেন। আগে এ স্তরের শিক্ষকরা ১৫তম গ্রেডে যোগদান করতেন এবং তখন তারা ৯ হাজার ৭০০ টাকা ভাতা পেতেন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হওয়ার পর ১৪তম গ্রেড উন্নীত হয়ে ১০ হাজার ২০০ টাকা বেতন পারেন।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছিল, নতুন বেতন গ্রেড যোগ্যতা অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কার্যকর করা হবে এবং এ বিষয়ে বিদ্যমান সকল বিধি-বিধান ও আনুষ্ঠানিকতা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। এই সংক্রান্ত ব্যয়ের উপর ভিত্তি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বেতন-ভাতা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে সমন্বয় করা হবে।

প্রসঙ্গতভাবে উল্লেখ্য যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১ তম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন। 

আন্দোলনের অংশবিশেষ হিসেবে তারা ঢাকায় সমাবেশ করে আসন্ন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বর্জনেরও হুমকি দিয়েছিলেন। অবশ্য পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা করার পর শিক্ষকেরা পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

Leave a Comment