আপনার মূল্যবান ভোটটি দিন

শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম

বাংলাদেশের ক্রিকেট বলা হয় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে। বাংলাদেশে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিকাংশ আন্তর্জাতিক ম্যাচ এই স্টেডিয়ামেই আয়োজিত হয়। ১১ বছরের ব্যবধানে স্টেডিয়ামে আজ মাঠে গড়িয়েছে একশরও বেশি ওয়ানডে।

শারজা, সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, হারারে স্পোর্টস ক্লাব ও প্রেমাদশা স্টেডিয়ামের পর ষষ্ঠ ভেন্যু হিসেবে ১০০র চেয়েও বেশি ওয়ানডের আয়োজক হল মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম

২০০৬ সালে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে প্রথমে এই স্টেডিয়ামকে ফুটবলের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। সম্পূর্ণভাবে ক্রিকেট স্টেডিয়াম হিসেবে স্বীকৃত হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের অনেক অর্জনের সাক্ষী হচ্ছে এই স্টেডিয়ামটি। এই মাঠেই নিউজিল্যান্ডকে ৪-০ তে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

স্টেডিয়ামে ২০১১ সালের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং এই মাঠে তিনটি এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত। স্টেডিয়াম কি মিরপুরে ৬ নং সেক্টরে অবস্থিত। এটি বর্তমানে শুধুমাত্র ক্রিকেট মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২৬,০০০ দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়াম টি ২০০৬ সালে স্থাপন করা হয়েছিল। 

শুরুতে এটি মিরপুর স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার স্টেডিয়ামটির নাম পরিবর্তন করে শের-ই-বাংলা বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম হিসেবে নামকরণ করেন। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নিজস্ব মাঠ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে করা হয়। 

এটি বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট, টেস্ট, এক-দিনের, টি-টোয়েন্টি এবং বাংলাদেশের জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের নিজস্ব মাঠ। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের অন্যতম ভেন্যু হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়েছিল।

এই মাঠে বিশ্বমানের সুবিধা সমূহের সমন্বয়ে তৈরিকৃত একটি আধুনিক স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়াম টি উপমহাদেশের সেরা মাঠগুলোর মধ্যে একটি। এই মাঠের মূল বৈশিষ্ট্য হল এর আধুনিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। মূলত ফুটবল এবং অ্যাথলেটিক্স এর জন্য তৈরি করা এই মাঠটি আয়তক্ষেত্রাকার। 

ক্রিকেট খেলার উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অনেক পুনঃনির্মাণ কাজ করতে হয়েছে মাঠটিতে। এমনকি তিনফুট মাটি খুঁড়ে লাল অ্যাথলেটিক্স ট্রাক তুলে ফেলা হয়েছিল। কংকর, মাটি আর ঘাস বিছানোর পূর্বেই পিভিসি পাইপ বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

উইকেট থেকে বাউন্ডারি পর্যন্ত চমৎকার ঢাল এবং ২৯ ইঞ্চির সমান ব্যবধানের দ্বারা এটি তৈরি করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে ফ্লাডলাইট লাগানোর পর থেকে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিবা-রাত্রি ক্রিকেট ম্যাচও আয়োজন করা হয়ে থাকে।

শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচসমূহ

ভেন্যুটি ২০০৪ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড প্রদত্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পরিবর্তে পুরুষ ও মহিলা উভয় জাতীয় দলের নিজস্ব মাঠ হিসেবে অধিগ্রহণ করা হয়। এ মাঠে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ম্যাচ ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং ২০০৭ সালে বাংলাদেশ ও ভারত খেলার মাধ্যমে এ মাঠের টেস্ট অভিষেক ঘটে। 

শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম আয়োজিত খেলার কিছু কৃতিত্ব

২০১৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এ মাঠে ১৫ টি টেস্ট এবং ৯৮ টি ওডিআই ম্যাচ অনুষ্ঠিত করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এক ইনিংসের পাঁচ বা তার চেয়ে বেশি উইকেট লাভ কারি বোলারকে ইংরেজিতে “ফাইভ উইকেট হল” বা “ফাইভ ফর” বা “ফিফার” বলে ডাকা হয়। এটিকে ক্রিকেটের একটি উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হিসেবে মানা হয়। 

শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম পাঁচ উইকেট লাভকারি বোলার হলেন ভারতীয় ক্রিকেটার জহির খান। তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০০৭ সালে এক ইনিংসে ৩৪ রানের বিনিময়ে পাঁচ উইকেট সংগ্রহ করেছিলেন। 

শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইতিহাসে সোহাগ গাজী একমাত্র বলার যিনি টেস্ট অভিষেক ম্যাচে ৭৪ রানের বিনিময়ে ৬টি উইকেট লাভ করেছিলেন। তবে সবচেয়ে সেরা ৫ উইকেট লাভ কারি টেস্ট বোলার হলেন বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম। তিনি ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩৯ রানের বিনিময়ে ৮ উইকেট লাভ করেছিলেন। 

টেস্ট ক্রিকেটে সর্বশেষ মেহেদী হাসান ৬ উইকেট লাভ করেন সে ৭৭ রানের বিনিময়ে এ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ২৩ জন বোলার পাঁচ উইকেট লাভ করেছেন।

২০১৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত, শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ওডিআইয়ে ১৬ জন বোলার পাঁচ উইকেট লাভ করেন।

ওডিআইয়ে বাংলাদেশের প্রথম পাঁচ উইকেট লাভ কারি হচ্ছেন ফরহাদ রেজা। ফরহাদ ২০০৮ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪২ রানে বিনিময়ে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন।

 এ মাঠে ৩ জন বোলার ওডিআই অভিষেকে ৫ উইকেট লাভ করেন। তারা হলেন তাসকিন আহমেদ মুস্তাফিজুর রহমান কাগিসো রাবাদা। তাদের মধ্যে রাবাদা তার অভিষেক ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। এ মাঠে সবচেয়ে সেরা বলার হলেন স্টুয়ার্ট বিনি। বিনি চার রানে 6 উইকেট নিয়েছিলেন। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এর সর্বশেষ ইংল্যান্ডের জ্যাকি বেল ৫১ রানের বিনিময়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছিল।

Leave a Comment