কি কি কারণে সেনাবাহিনী তে চাকরি হয় না

সাধারণত এসএসসি, এইসএসসি পরীক্ষার পর সেনাবাহিনী তে যোগদান করা যায়। সেই হিসেবে আপনাকে কিছু নিয়ম মানতে হবে এবং শারীরিক ভাবে কিছু ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে।

উপরোক্ত তথ্যাবলির বিস্তারিত নিম্নরূপ:

  • ওজন ও উচ্চতা ।
  • চোঁখ,কান ও নাক এর ভেতরের সাইনাস।
  • পলিপাস বা নাকের ভেতরে বাড়তি মাংস আছে কি না।
  • নক নি ( দুই হাটুর মাঝের মাংসপেশি)।
  • ফ্ল্যাট ফিট ।
  • বুকের সংকোচন ও প্রসারন।
  • মুখে অতিরিক্ত দাট থাকা।
  • পাইলস ইত্যাদি ।

উচ্চতা :- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করতে হলে ছেলেদের ক্ষেত্রে উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফিট ৬ ইঞ্চি থাকতে হবে , মেয়েদের ৫ ফিট ২ ইঞ্চি এর বেশি হতে হবে।উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন অতিরিক্ত কম বা অতিরিক্ত বেশি হওয়া যাবে না।

কাটা দাগের ক্ষেত্রে :- মাথায় বড় ও গভীর দাগ থাকলে মাঝেমাঝে সাস্থ্য পরীক্ষায় অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়। কারণ মাথায় এ ধরনের কোনো দাগ থাকলে এ আঘাতের কারণে মাথার ভেতরে কোনো স্থায়ী ক্ষতি হয়েছে কি না তা নির্ধারণ করা দুষ্কর।

মাথায় টাক পড়া থাকলে আপনি বাদ পরে যেতে পারেন ।মুখে অতিরিক্ত দাত থাকা,এই বিষয় টি সাধারণত প্রাথমিক মেডিকেলে ধরা হয় না তবে ফাইনাল মেডিকেলে এটি একটি গুরুতপূর্ণ বিষয় হিসেবে দেখা হয়। ত্বক বা শরীরের চামড়ার ফাটা দাগ জনিত সমস্যা বা স্ট্রেচ মারকের সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন |

শরীরের ত্বকের বিভিন্ন অংশে এই ফাটা দাগ গুলা দেখা যায় । অনেকের মতে এই সমস্যা বাড়তি ওজনের জন্য হয়।শরীরের আয়তন যখন বেড়ে যায় , ত্বক তখন স্ট্রেচ করে বাড়তি আয়তনকে ঢাকতে। ফলে তৈরি হয় এই দাগ । এটি ত্বকের উপরে দৃশ্যমান লাইনের মত দেখায় ।

শরীরের বিভিন্ন অংশে যেমন – পেটের প্রাচীর , কোমর , হাট , ঘাড়, হাটুর পেছনে, উরু এমনকি বুকেও দেখা যায়। এই সকল ক্ষেত্রে আপনি বাদ পড়তে পারেন।

চর্মরোগ : সাস্থ্য পরীক্ষার শুরুতেই যদি কোনো প্রার্থীর শরীরে ঘা , খোসপাঁচড়া, চুলকানি , ছুলি, শ্বেতিরোগ , কুষ্ঠ বা অন্য কোনো কর্মী রোগ ধরা পড়ে , তবে তা প্রার্থীর বাদ যাওয়ার কারণ হতে পারে।

চোখ : কালার ব্লাইন্ড বা দৃষ্টি শক্তির কোনো সমস্যা থাকলে আপনি বাদ পরে পড়তে পারেন।

ঠোঁটকাটা বা কানকাটা : কারও কারও জন্মগত ভাবে ওপরের বা নিচের ঠোঁট কাটা থাকে , আবার কারও জন্মগত বা দুর্ঘটনাবশত কান কাটা থাকে । এ ক্ষেত্রে প্রার্থীকে শারীরিকভাবে উপযুক্ত বিবেচনা করা হয় না ।

অতিরিক্ত ধূমপান : যারা অতিরিক্ত ধূমপান করে তারা বাদ পরে যাবেন।যারা ধূমপান করে না তাদের বুকের মাপ যদি ৩০ হয় তাহলে প্রসারিত অবস্থায় হবে নূন্যতম ৩২ । কিন্তু যারা রেগুলার ধূমপান করে তাদের ক্ষেত্রে দুই ইঞ্চি বাড়বে না।

কান : সাধারণত কানে আপনার কোনো সমস্যা আসে কি না ত দেখবেন ।মূলত কানের পর্দা ঠিক আসে কি না।

ভার্জিন এর ক্ষেত্রে : যে কোনো প্রকার যৌনরোগে আক্রান্ত প্রার্থীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বাদ দেওয়া হয় । এসব কারণেও বাদ পড়ে যাবেন । এর পাশাপাশি আপনার অন্ডকোষ ছোট বা বড় হলে , অতিরিক্ত হস্তমৈথূন করলে ইত্যাদি। এসব কারণেও বাদ যেতে পারেন।

অতিরিক্ত তোতলা : আপনি কথায় কথায় যদি আটকে জন বা তটলান তাহলে আপনি বাদ পরে যেতে পারেন।

নাকের সমস্যা : নাকের খুব কম মানুষেরই সমস্যা থাকে । নাকের ভেতর বাড়তি মাংস থাকা যা পলিপাস নামে জানা হয়ে থাকে অথবা নাকের হার বাঁকা থাকলে আপনি বাদ পড়তে পারেন।

পা বা ফ্ল্যাট ফিট / দুই হাঁটু একসাথে মিশে যাওয়া : সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পর আপনার দুই পায়ের গোড়ালি এক জায়গায় করলে এমতাবস্থায় যদি দুই হাটুর মাঝখানে ফাঁকা না থাকে সে ক্ষেত্রে আপনাকে বাদ বাদ দেওয়া হবে ।দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে থাকলে বা দৌড়াদৌড়ি করলে কারও কারও পায়ের হাঁটুর পেছনের অংশে রগ ফুলে যায় ।

কারও কারও ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশ প্রকট এবং এর ফলে তাদের দাড়িয়ে থাকতে বা দৌড়াদৌড়ি তে সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে আপনি বাদ পরে যেতে পারেন। আমাদের সবার পায়ের তালুর মাঝে একটা হালকা কার্ভ অংশ থাকে । এই কার্ভ না থাকলে ক্যাডেট বা কোনো ডিফেন্স সদস্য বেশি দুর দৌড়াতে পরে না । তবে অনেকেরই এটি থাকে না বা এটি জন্মগত ভাবে হয়ে থাকে । এ ক্ষেত্রেও প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয় থাকে ।

হাট ঘামা : নার্ভাস হলে অনেকেরই হাট ঘামে , আত্ববিশ্বাসহীনতার কারণেও এমন হয় । এমন হাট ঘামা স্বাভাবিক । কিন্তু কারও কারও হাট এত বেশি খামে যে পরীক্ষার খাতা ভিজে যায়। এটা এক ধরনের অসুখ।যায় কারণে আপনি বাদ পড়তে পারেন ।

পাইলস ও হার্নিয়া : এই দুটির যে কোনো একটা থাকলে আপনার উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর যথাযথ চিকিৎসা নেয়া । কারণ কারো এই দুটি থাকলে তারা ফাইনাল মেডিকেল থেকে তো বাদ যাবেনই এমনকি প্রাথমিক মেডিকেল থেকে বাদ যেতে পারেন।

প্রার্থী নিজে যদি রাষ্ট্রদ্রোহী কোনো কাজে জড়িত থাকে বা ছিল তাহলে তাকে বাদ দেয়া হবে। শারীরিক বড় ধরনের কোনো অপারেশন করানো হয়ে থাকলে (যেমন:হার্ট,কিডনি,পাকস্থলী,ফুসফুসে কোনো বড় ধরনের সমস্যার অপারেশন হয়ে থাকলে) আপনি বাদ যেতে পারেন ।

উপরে উল্লেখিত সমস্যা গুলো থাকলে যত দ্রুত সম্ভব ত সমাধান করুন এবং সমস্যা না থাকলে নিম্নের নিয়ম মেনে চলুন।

  • নিয়মিত হাঁটা
  • পরিমিত ভাবে খাবার গ্রহণ করা
  • সাঁতার কাটা
  • পুশ আপ দেয়া
  • হালকা পাতলা শারীরিক ব্যায়াম করা
  • শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা।

লিখিত পরীক্ষায় ও ভাইভা পরীক্ষায় নূন্যতম পাস নম্বর না পেলে বা যথেষ্ট ভালো নম্বর না পেলে আপনি বাদ যেতে পারেন। অনেক প্রার্থী মেডিকেল ফিট হওয়ার পরেও পরীক্ষায় নম্বর কম পাওয়ার কারণে বাদ হয়ে যায়। এছাড়াও অনেক সময় একদিনে অধিক সংখক ফিট লোক হওয়ার কারণে সব থেকে বেশি ফিট যারা তাদের এই নিয়োগ দেওয়া হয়।

Leave a Comment